#CollegeReview7

#সরকারিবিজ্ঞানকলেজ

#Govt_Science_College

কলেজ রিভিউ

ঢাকার সেরা কলেজ


রাজধানী ঢাকার প্রানকেন্দ্র ফার্মগেটে অবস্থিত দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বিজ্ঞান কলেজ। বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য এটি একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এ বিদ্যাপীঠ ১৯৫৪ সালে ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ নামে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তীতে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ হিসেবে নামকরণ হয়। ৯ একরের উপর স্থাপিত এই ক্যাম্পাস বর্তমানে দেশের সেরা কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম।

💠অফিসিয়াল ওয়েবসাইট : http://gsctd.edu.bd/
💠EIIN: 108535

💠ক্যাম্পাস:
প্রায় ০৯ একর আয়তনের বিশাল ক্যাম্পাসের এই কলেজটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। ব্যস্ততম ঢাকার কোলাহল নেই সবিকের ক্যাম্পাসে।

কলেজ ক্যাম্পাসে রয়েছে
🔹তিনতলা ভবন
🔹সেমিপাকা বিল্ডিং
🔹পদার্বিদ্যা, রসায়নবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান গবেষনাগার
🔹শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত কম্পিউটার ল্যাব
🔹লাইব্রেরি
🔹অডিটোরিয়াম
🔹জিমনেসিয়াম
🔹ক্যান্টিন
🔹মসজিদ
🔹খেলার মাঠ
🔹শহীদ মিনার
🔹স্মৃতিসৌধ
🔹রাসেল চত্বর ; যেখানে মন খুলে আড্ডা দেয়া যায় এবং
🔹দুইটি আবাসিক ছাত্রাবাস (ঢাকার বাইরের ছাত্রদের জন্য)
🔹দুটি বাস; স্পন্দন-১ ও স্পন্দন-২ (ঢাকার বিভিন্ন স্থানের ছাত্রদের জন্য)

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিশাল ভান্ডার এই ক্যাম্পাস। ঢাকায় এরকম সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাস খুব কমই আছে। এই ক্যাম্পাসে আছে বিভিন্ন রকমের গাছপালার সমাহার। আছে ফুলের বাগান যেখানে আছে উদ্ভিদবিজ্ঞানের এক বিপুল ভান্ডার।

এছাড়া প্রত্যেক বিভাগের আছে নিজস্ব ল্যাব ব্যাবস্থা। প্রত্যেকটি ল্যাবেই আছে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষক। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ল্যাব ক্লাস নেয়া হয় এবং হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কলেজে মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতেও ক্লাস নেওয়া হয়।শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন উপস্থিতি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নির্ধারন করা হয়।পুরো ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতাধীন।

💠আসনসংখ্যা:
পুরো কলেজটিতে প্রথম বর্ষ এবং দ্বিতীয় বর্ষ মিলে মোট ২৪০০ ছাত্র আছে।প্রত্যেকটি ইয়ারে সব মিলিয়ে ১২০০ জন ছাত্র। মোট ৮ টি সেকশনে বিভক্ত করে প্রত্যেক সেকশনে মোট ১৫০ জন করে ১২০০ স্টুডেন্ট এর ক্লাস নেয়া হয়।

💠শিক্ষকমন্ডলী:
বর্তমানে কলেজটিতে মোট ৪৪ জন শিক্ষক আছেন বিভিন্ন বিভাগে।প্রত্যেক শিক্ষকই বিসিএস ক্যাডার যোগ্যতা সম্পন্ন। তারা প্রত্যেকেই শিক্ষার্থীদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। নিয়মিত ক্লাস করলে এবং শিক্ষকদের ক্লাস রেগুলার ফলো করলে এক্সট্রা কোন প্রাইভেটও দরকার হয় না অনেক সময়। তাছাড়া এখানকার শিক্ষকরা যথেষ্ট ছাত্রবান্ধব।প্রত্যেকটা ছাত্রের ব্যাপারে তারা যত্নশীল।যেকোন সময় যেকোন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছ থেকে সাহায্য পেয়ে থাকে। এছাড়া অনেক শিক্ষকই আছেন যারা বিভিন্ন বইয়ের লেখক এবং তাদের লিখা বই আমাদের পাঠ্য।

💠খরচ:
কলেজের বেতন এবং ভর্তি ফি সরকার কতৃক নির্ধারিত। সরকারি কলেজ হিসেবে তার পরিমান সকলেরই সাধ্যের মধ্যে আছে। প্রত্যেক বর্ষের শুরুতেই দুইবারে তা নেয়া হয়। দুই বর্ষ মিলিয়ে <১০০০০ টাকা খরচ হবে (যার মধ্যে সবকিছু অন্তর্ভূক্ত)।

💠কলেজ ইউনিফর্ম:
আকাশী কালারের শার্ট
অফ হোয়াইট প্যান্ট
বুকপকেটে লোগো
আইডি কার্ড
কালো জুতা এবং মোজা।

💠ক্লাবসমূহ:
সুশিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক মৃল্যবোধ বিকাশ এবং নেতৃত্বের গুণাবলি প্রস্ফুটিতো করার লক্ষ্যে কলেজে বিভিন্ন ক্লাবের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

🔹বিজ্ঞান ক্লাব (GSCSC),
🔹বিতর্ক ক্লাব(GSCDC),
🔹সাংস্কৃতিক ক্লাব(GSCCC),
🔹ফটোগ্রাফি ক্লাব(GSCPC),
🔹আইটি ক্লাব(GSCITC),
🔹ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব (GSCELC)

প্রত্যেকটি ক্লাবের সার্বিক তত্বাবধানে আছেন সম্মানিত শিক্ষকগন। এছাড়া বিভিন্ন সময় এসব ক্লাব কর্তৃক বিভিন্ন ফেস্টের আয়োজন করা হয় যাতে ঢাকার প্রত্যেকটা কলেজ উপস্থিত হয়ে ফেস্টে অংশগ্রহণ করে।
তাছাড়াও বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউট কলেজের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকে এবং বিভিন্ন ক্যাম্পিং এবং সেমিনারে যোগ দেয়ার সুযোগও তারা পায়।

💠আবাসিক সুবিধা:
ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য কলেজে আছে দুইটি আবাসিক হল। আলাদা আলাদা দুই বর্ষের জন্য হলগুলোও আলাদা।একটি হচ্ছে কাজী নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাস এবং অপরটি ড. কুদরত ই খুদা ছাত্রাবাস। হলের ছাত্রদের ভর্তির শুরুতে এক বছরের জন্য টাকা জমা দিতে হয়। আর খাওয়াদাওয়ার খরচ প্রতিমাসে আলাদা করে দিতে হয়।হলে আছে খুব কড়া নিয়মকানুন এবং খুব ভালো সিকিউরিটির ব্যাবস্থা।যাতে ছাত্রদের কোনরকমের অসুবিধা বা বিপদ আপদে পড়তে না হয়। হলের পরিবেশ অত্যন্ত চমৎকার এবং সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত। হলের খাবার মান এবং পড়ালেখার পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। সার্বক্ষণিক শিক্ষক দ্বারা হল মনিটরিং করা হয়।

🔹কাজী নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাস – ১২০ টি সিট
🔹ড. কুদরত ই খুদা ছাত্রাবাস – ১৫০ টি সিট

মাসিক মিল খরচ – ৩০০০ টাকার মধ্যে (ছুটি হলে মিল বন্ধ থাকে)।

💠যাতায়াত সুবিধা:
ঢাকার বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য আছে স্পন্দন-১ এবং স্পন্দন-২ নামের দুইটি বাস। যা মিরপুর ও যাত্রাবাড়ী রুটে নিয়মিত চলাচল করছে।

💠ফলাফল:
কলেজের রেজাল্ট অত্যন্ত ভালো। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ -৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। তাছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবছর বুয়েট, মেডিকেল ও ঢাবিসহ দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাধিক সংখ্যক ছাত্র চান্স পেয়ে থাকে।

💠ভর্তি যোগ্যতা:
কলেজে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের বোর্ড কতৃক নির্ধারিত ন্যুনতম জিপিএ ৫।জিপিএ ৫ এর নিচে থাকলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। হয়তো আবেদন করা যাবে কিন্তু চান্স পাওয়া যাবে না। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক এবং এক্ষেত্রে বোর্ডের নিয়মাবলি পুরোপুরি অনুসরণ করা হয়। এবং ভর্তি কার্যক্রম একাদশ শ্রেণীর ভর্তির ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়।

সবশেষে বলতে চাই সরকারি বিজ্ঞান কলেজ দেশের স্বনামধন্য একটি কলেজ। প্রতিবছর এখান থেকে এডমিশন টেস্টে বিপুল সংখ্যক ছাত্র দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে থাকে। আধুনিক এবং মানসম্মত পড়াশোনা সাথে শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম শিক্ষার্থীদেরকে ভালো ফলাফল লাভ করার প্রেরনা যোগায়। এছাড়া পড়াশুনার যথাযথ পরিবেশও এখানে পাওয়া যায়। তাই বলব কলেজ সিলেকশনের ক্ষেত্রে এটি তোমাদের জন্য একটি বেস্ট চয়েজ হতে পারে।

✒✒✒লেখা ও ছবি সংগৃহিত







Comments